প্রয়াত হলেন দেশের প্রথম কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বুটা সিং

Mysepik Webdesk: নতুন বছরে দেশের রাজনীতির অঙ্গন শূন্য করে চলে গেলেন বুটা সিং। ভারতের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা বুটা সিং দীর্ঘ অসুস্থতার পরে অনন্তদেশে পাড়ি দিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণের খবরে দেশ ও রাজস্থানের রাজনৈতিক মহলে শোকের মহল তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: দাবি না মানলে এবার পেট্রল পাম্প, শপিং মল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি আন্দোলনকারী কৃষকদের

বুটা সিংয়ের সঙ্গে রাজস্থানের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। উল্লেখ্য যে, যে ১৯৮৪ সালে বুটা সিং রাজস্থানের জালোর আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। তবে তিনি কীভাবে রাজস্থানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন? এর পেছনে খুব আকর্ষণীয় একটি গল্প রয়েছে। আসলে, সরদার বুটা সিং, যিনি নেহরু-গান্ধি পরিবারের খুব কাছের মানুষ ছিলেন, তিনি যখন রাজস্থানের সঙ্গে যুক্ত হন, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি রাজস্থান ছেড়ে যাননি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, অপারেশন ব্লু স্টার এবং ইন্দিরা গান্ধির হত্যার পরে রাজীব গান্ধি চেয়েছিলেন যে, বুটা সিং এমন একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন, যেখানে তাঁর জয় নিশ্চিত। কারণ কংগ্রেস এবং বুটা সিং উভয়ই জানতেন যে, পঞ্জাব প্রদেশের অপারেশন ব্লু স্টারে জারনাইল সিং ভিন্দ্রনওয়ালে নিহত হওয়ার পরে পঞ্জাব প্রদেশের অনেক শিখ কংগ্রেসকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন। সুতরাং, বুটা সিংকে জালোর-সিরোহি আসন দেওয়া হয়েছিল, যা কংগ্রেসের দুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল। এর আগে বুটা সিংহ ১৯৬৬ সাল থেকে পঞ্জাবের রোপাদ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছিলেন। পঞ্জাবের দলিত কংগ্রেস নেতা বুটা সিং হরিয়ানার সাধনা আসন থেকে তাঁর প্রথম নির্বাচন লড়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতের তিন কোটি করোনাযোদ্ধাদের দেওয়া হবে বিনামূল্যে কোভিড ভ্যাকসিন

১৯৮৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বুটা সিং প্রথমবারের মতো নির্বাচনে বিজয়ী হন। কিন্তু ১৯৮৯ সালে তিনি যখন আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তখন তাঁকে সেই যুগের হেভিওয়েট বিজেপি নেতা কৈলাস মেঘওয়ালের মাঠে নামানো হয়েছিল। তবে এই রোমাঞ্চকর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেঘওয়াল জিতে যান। তবে বিশেষ বিষয়টি হল, বুটা সিং তাঁর আসনটি ছেড়ে দেননি। আবার ১৯৯১ সালে জালোর থেকে নির্বাচনে জিতেছিলেন। একইভাবে, ১৯৯৯ সালে তিনি সিরোহির সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে ২০০৪ সালে জালোর থেকে নির্বাচনে জয়ের পরে তাঁকে বিহারের রাজ্যপাল করা হয়।
শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ এইমস-এ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বুটা সিংয়ের প্রয়াণে টুইট করে শোকবার্তা লিখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ‘‘অভিজ্ঞ নেতা ছিলেন বুটা সিং। দুস্থদের জন্য সবসময়ই সরব হতেন। তাঁর প্রয়াণে মর্মাহত। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।’’
অন্যদিকে, রাহুল গান্ধি লিখেছেন, ‘‘সর্দার বুটা সিংয়ের মৃত্যুতে দেশ একজন সত্যিকারের প্রশাসক এবং একজন অনুগত নেতাকে হারিয়েছে। তিনি তাঁর পুরো জীবন দেশের সেবায় এবং জনগণের মঙ্গলার্থে নিবেদিত করেছিলেন, যার জন্য তিনি সর্বদা স্মরণীয় থাকবেন। এই কঠিন সময়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি রইল আমার সমবেদনা।” উল্লেখ্য যে, ভারতের প্রথম কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী বুটা সিং ইন্দিরা গান্ধির খুব কাছের মানুষ ছিলেন। ১৯৮২ এশিয়ান গেমস দারুণভাবে আয়োজন করেছিলেন তিনি।