ট্রফি জয়ের স্বপ্নে আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে দিল্লি

Mysepik Webdesk: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং দিল্লি রাজধানীগুলির মধ্যে খেলছে আজ আইপিএলের দ্বিতীয় বাছাইপর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং দিল্লি ক্যাপিটালস। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি। দিল্লির দল দু’টি পরিবর্তন নিয়ে নেমেছিল। আজ পৃথ্বী শ সুযোগ পাননি, অন্যদিকে প্রবীন দুবে দলে জায়গা পেয়েছেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ গোটা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। বিশেষত এই দলের বোলাররা দারুণ বোলিং করেছেন। তবে আজ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাদের বোলারদের অনেকটাই নিষ্প্রহ থাকতে দেখা যায়।

৬ ওভারের পাওয়ারপ্লে শেষে দিল্লি তোলে ৬৫ রান। মার্কাস স্টোনিস এবং শিখর ধাওয়ান ক্রিজে জমাট বেঁধে ইনিংসকে তখন দ্রুতগতিতে চালনা করছেন। সেই সময় স্টোইনিস ২১ বলে ৩৩ এবং ধাওয়ান ১৬ বলে ৩০ রানে অপরাজিত। এদিকে, দিল্লি দশম ওভারেই ১০০ রান পূর্ণ করে। সেই সময় একটিমাত্র উইকেটের পতন ঘটেছিল। মার্কস স্টোইনিস ৩৮ রান করে রশিদ খানের শিকার হন। রশিদ খান তাঁর দ্বিতীয় ওভারে স্টোইনিসকে ধীর বলে ক্লিন বোল্ড করেন।

এই ম্যাচে ‘গব্বর’ ধাওয়ান অর্ধশতক পূরণ করেন মাত্র ২৬ বলে। সন্দীপ শর্মার তৃতীয় ওভারে মার্কস স্টোইনিসের ক্যাচ পড়ে যায় হোল্ডারের হাতে। এর পরে মার্কাস স্টেইনিস খতরনক হয়ে উঠেন। পরের ওভারে সেই জেসন হোল্ডারকেই তিনটি বাউন্ডারি এবং একটি ছক্কা মারেন স্টোইনিস। শেষমেশ ধাওয়ান ৫০ বলে ৭৮, হেটমায়ার ২২ বলে ৪২-এর সৌজন্যে দিল্লি ২০ ওভারে তোলে ১৮৯ রান।

জবাবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে অধিনায়ক ওয়ার্নারের সঙ্গে ইনিংসটি শুরু করেন প্রিয়ম গার্গ। অশ্বিনকে প্রথম ওভারে নিয়ে এসেছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক। প্রথম ওভারেই গার্গ একটি ছক্কা হাঁকান এই অফস্পিনারকে।

পরের ওভারেই হায়দরাবাদের দলনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকে (২) অনবদ্য ইয়র্কারে স্টাম্প উড়িয়ে দিয়ে প্যাভিলিয়নে পাঠান প্রোটিয়া স্টার পেসার কাগিসো রাবাডা। পরপর দু’ম্যাচে ব্যর্থ হন এই অজি খেলোয়াড়।

হায়দরাবাদ এরপর আরও দু’টি উইকেট পতনের পরে চাপে পড়ে যায়। প্রিয়ম গর্গ ১৭ রানে এবং মণীশ পাণ্ডে ২১ রানে ফেরেন। দু’জনকেই একই ওভারে ফেরান স্টোইনিস। হায়দরাবাদ ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে। হায়দরাবাদের আশা-ভরসা তখন ক্রিজে উপস্থিত থাকা কিউয়ি তারকা কেন উইলিয়ামসন এবং ক্যারিবিয়ান স্টার জেসন হোল্ডার।

দু’জনে খেলছিলেনও ভালো। গড়ে তুলেছিলেন ৪৬ রানের পার্টনারশিপ। তবে এরই মধ্যে ছন্দপতন ঘটে। অক্ষর পাটেলের বলে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি সীমানায় প্রবীন দুবের হাতে জমা পড়েন হোল্ডার। ১৫ বলে ১১ রান করে ওয়ার্নার ব্রিগেডকে চিন্তায় রেখে বিদায় নেন হোল্ডার। এরপর ক্রিজে আসেন আব্দুল সামাদ। তাঁর টিমকে জেতাতে গেলে সামাদকে যোগ্য সঙ্গত দিতেই হত তাঁর অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে। কারণ উইলিয়ামসন তখনও ভরসা জুগিয়ে চলছিলেন তাঁর দলকে।

৩৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন উইলিয়ামসন। ততক্ষণে তিনি তিনটি চার এবং চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে দিল্লির জয়ের পথে একমাত্র কাঁটা হিসাবে নিজেকে প্রতিপন্ন করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। শেষ পাঁচ ওভারে হায়দরাবাদের দরকার তখন ৬১ রান। সামাদ দারুণ সাথ দিচ্ছিলেন তাঁর দলনায়ককে। তবে উইলিয়ামসনের লড়াই থামে ৬৭ রানে। তাঁকেও ফেরান স্টোইনিস। এরপর রশিদ খান নেমে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে ব্যাট করতে থাকেন। অন্যদিকে, সেরা বোলার রাবাদাকে ছক্কা হাঁকিয়ে হায়দরাবাদের আশা তখনও জিইয়ে রাখেন। তবে ছয় মারার পরের বলেই তিনি ১৬ বলে ৩৩ রানে আউট হন। এর ঠিক পরের বলেই প্যাভিলয়নের রাস্তা দেখেন রশিদ খান (১১)। শ্রীবৎস গোস্বামী আট নম্বরে নামেন। এদিনও ব্যর্থ হন তিনি। রানের খাতা না খুলেই বিদায় নেন তিনি। ১৬ রানে ম্যাচ জিতে আইপিএল ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে ওঠে দিল্লি। ১০ তারিখ দুবাইয়ে তারা গতবছরের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের মুখোমুখি হবে।
ছবি সৌজন্যে আইপিএল