মানবিক ভারত: অসুস্থ নেপালি কন্যাসন্তানের চিকিৎসার জন্য খুলে দেওয়া হল সাসপেনশন ব্রিজ

Mysepik Webdesk: সম্প্রতি নেপালের পক্ষ থেকে ভারত সম্পর্কে বারবার বিতর্কিত বক্তব্য করতে শোনা গেছে। তা সত্ত্বেও ভারত অসহায়ের জন্য তার উদারতা প্রকাশে কোনও কমতি রাখেনি। নেপালের এক অসুস্থ বাচ্চা মেয়ের জীবন বাঁচাতে সমস্ত বিধি-বিধান এবং বিরোধকে পাশ কাটিয়ে সোমবার বিকেলে মাত্র ২০ মিনিটের জন্য আন্তর্জাতিক সাসপেনশন ব্রিজকে খুলে দিয়েছিল তারা। সেতুটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ কন্যার মা-বাবা যেন ধড়ে প্রাণ ফিরে পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘গুলি করে মারবেন না’ বুকে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে আসামি হাজির থানায়
সেই দম্পতি ভারতীয় আধিকারিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “ভারতকে সাধে মহান বলা হয় না।” প্রাথমিক চিকিৎসার পর অসুস্থ বাচ্চাটিকে ধরচুলার বালুওয়াকোটে রাখা হয়। আজ, মঙ্গলবার তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য পিথোরাগড় জেলা হাসপাতালে আনা হবে।
ভারত সংলগ্ন নেপালের মল্লিকার্জুন গ্রামের মেয়েটি দীর্ঘদিন ধরে ধরচুলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। অন্ত্রের সমস্যার কারণে মেয়েটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে উঠেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, নেপালের চিকিৎসকরা বাচ্চাটির পরিবারকে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে ঝুলাপুল বন্ধ থাকায় পরিবার হতবাক হয়ে যায়। পরে, নেপালের সমাজকর্মীদের মাধ্যমে পরিবারটি পিথোরাগড় জেলা প্রশাসনের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করেছিল। তখন ভারতীয় আধিকারিকরা অবিলম্বে সাসপেনশন ব্রিজটি খোলার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ফের চিনের ‘ক্যাট কিউ ভাইরাস’ নিয়ে দেশবাসীকে আগাম সতর্ক করল ICMR
যখন সাসপেনশন ব্রিজটি মাত্র ২০ মিনিটের জন্য চালু হয়েছিল, তখন উভয় দেশের ১৩৮ জন সেতুটি দিয়ে গিয়েছিলেন। এসএসবি পরিদর্শক কাশ্মীর সিংহ জানিয়েছেন যে, অসুস্থ মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য ভারতে আনা হবে। এ ছাড়া আরও কিছু মানুষকে ভারত ও নেপালে যেতে হয়েছিল। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উপলব্ধি করে ভারত ও নেপাল প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। যার পর উভয় দেশের সম্মতিতে সেতুটি খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ৮৮ জন নেপাল থেকে ভারতে এবং ৫০ জন ভারত থেকে নেপাল পাড়ি দিয়েছিলেন।
এদিকে, নেপাল আবারও কূটনৈতিক চাপ চাপানোর জন্য দু’টি বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) গঠন করেছে। তারা চিতওয়ানের মণি পৌরসভা এলাকায় দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ফাঁকা করে বিওপি স্থাপন করেছে। মনে করা হচ্ছে, এটি কৌশলগতভাবে ভারতকে ঘিরে নেপালের প্রস্তুতি। নেপাল এরই মধ্যে এর আগে দারচুলা ও বৈতরিতে ১২টিরও বেশি বিওপি স্থাপন করেছে।
রোটি-বেটির সম্পর্ককে সামনে রেখে নেপাল কৌশলগত ভিত্তিতে ভারতকে ঘিরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বলা হচ্ছে যে নেপাল একদিনেই চিতওয়ান অঞ্চলে দুটি বিওপি স্থাপন করেছে। বিওপি উদ্বোধনের জন্য বাগমতি রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী সদর দফতরের সদর দফতরের মহাপরিদর্শক নায়েবকে সেখানে ডেকে আনা হয়েছিল। সশস্ত্র রক্ষী বাহিনী ১৭ চিতওয়ান, এসপি দীপক কুমার থাপা নেপালি মিডিয়ায় এটি প্রকাশ করেছেন। জানা গিয়েছে যে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলটি শক্তিশালী করতে এবং সেখানে অঘটন রোধে চিতোয়ানের মাঝি পৌরসভা ১ গার্ডিতে অবস্থিত কাদিরেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রায়দণ্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিওপি স্থাপন করা হয়েছে।