Mysepik Webdesk: ভারতীয় পুরুষ ক্রিকেটের অবস্থা এই মুহূর্তে সোপ অপেরার মতো। প্রতিদিনই নতুন কিছু নাটক দেখা যাচ্ছে। এখন অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া, অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে নতুন অধিনায়ক করা নিয়ে মহল সরগরম। এসবের মধ্যেই আর কিছুদিনের মধ্যেই রয়েছে মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ। তা নিয়ে কোনও আলোচনা নেই। পুরুষদের ক্রিকেট যেভাবে কভারেজ পাচ্ছে, সেই কারণে মহিলা ক্রিকেট নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করছেন না হয়তো। অথচ আমাদের মহিলা দল গত তিনটি আইসিসি ট্রফির মধ্যে দু’বার ফাইনালে উঠেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৭ ওডিআই বিশ্বকাপ এবং ২০২০-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
আরও পড়ুন: বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগে স্থগিত হয়ে গেল পাকিস্তানের দু’টি জাতীয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট

ভারতীয় মহিলা দল ২০১৮-এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও খেলেছে। মেলবোর্নে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে ৮৫ হাজারেরও বেশি দর্শক এসেছিল। কিন্তু তারপর চিত্র বদলে যায়। কোভিডের কারণে ভারতীয় মহিলা দল তার পর এক বছর কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়নি। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের পর অস্ট্রেলিয়ার সব খেলোয়াড় বিগ ব্যাশ লিগে অংশ নেন। ২০ জানুয়ারি থেকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মহিলা অ্যাশেজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডে চলছে মহিলা সুপার স্ম্যাশ। ভারতের শেষ ম্যাচের পর পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ডের দলগুলো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে।
আরও পড়ুন: আইপিএল: মোটা অঙ্কের বিনিময়ে আহমদাবাদে হার্দিক-রশিদ-শুভমান

মহিলাদের আইপিএলে ৩টি দলের মধ্যে চারটি ম্যাচ হয়। এটি ২০২০ সালে শারজাহতে আয়োজিত হয়েছিল। ২০২১ সালে চার ম্যাচের মহিলা আইপিএল আয়োজিত হয়নি। অন্যদিকে, ইংল্যান্ডের মহিলা খেলোয়াড়রা দ্য হান্ড্রেডে এবং অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা মহিলা বিবিএলে অংশ নেয়। অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া সফরের পর আর কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি ভারতীয় মহিলা দল। ভারতের ৮ জন খেলোয়াড় বিগ ব্যাশে অংশ নিলেও দল হিসেবে খেলতে পারেননি ক্রিকেটাররা। ডিসেম্বরে চ্যালেঞ্জার ট্রফি অনুষ্ঠিত হলেও শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়রা অংশ নেননি এতে।
ভারতীয় মহিলা দলের অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলার কথা থাকলেও করোনার কারণে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়নি। একইসঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএল খেলার পর অস্ট্রেলিয়া সফরে গেছেন পুরুষ খেলোয়াড়রা। অথচ মহিলা ক্রিকেটের ক্ষেত্রে চিত্রটা একেবারেই বিপরীত ছিল। ইংলিশ বোর্ড ভারতীয় খেলোয়াড়দের আনতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বিসিসিআই রাজি হয়নি। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজও বাতিল করা হয়েছে। তারপরে, মহিলা দল ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে। কম ম্যাচ খেলার কারণে প্রস্তুতিটা ঠিকমতো নিতে পারেনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। দু’টি সিরিজই হেরে যায় ভারত।
আরও পড়ুন: টেস্ট দলের অধিনায়ক হতে তৈরি বুমরাহ

বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ বলেছিলেন, ‘মহামারির মধ্যে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত করা ঝুঁকিপূর্ণ। বিসিসিআই কোনও ক্ষেত্রেই খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষাকে বিপন্ন করতে চায়নি। প্রতিটি রাজ্যের খেলার জন্য আলাদা নিয়ম এবং বিধিনিষেধ ছিল।’ তা যদি হয়, তবে ভারতীয় পুরুষ দল এতগুলো সিরিজ খেলল কোন জাদুবলে? পুরুষ দলের সিরিজ যখন আয়োজন করা গেল, তখন মহিলা দলের ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের পক্ষে বাধা কোথায় ছিল? প্রশ্নগুলো খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। বিশেষ করে মার্চের শুরুতেই যেখানে রয়েছে বিশ্বকাপ। ৬ তারিখ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলে বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করবেন মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামীরা। কিন্তু টুর্নামেন্টে খারাপ পারফরম্যান্স করলে কিন্তু বিসিসিআইয়ের একচোখা নীতি কাঠগড়ায় উঠবে।