কৃষাণ প্রজাতন্ত্র: অন্য প্যারেডের প্রস্তুতি

Mysepik Webdesk: এবছর এক ভিন্ন প্রজাতন্ত্র দিবস দেখবে দেশবাসী। একদিকে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণ রাখবেন আর অন্যদিকে, কৃষক সংগঠনগুলি ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে ট্র্যাক্টর র্যা লি করবে। দিল্লি পুলিশ কৃষকদের এই ট্র্যাক্টর কুচকাওয়াজে রাজি হওয়ার পরে সিংহু ও টিকরি সীমান্তে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে ট্রাক্টর আগমন অব্যাহত রয়েছে। সূত্রমতে, রবিবার রাত অবধি প্রায় ২০,০০০ ট্রাক্টর টিকরি, সিংহু এবং গাজিপুর সীমান্তে পৌঁছেছে। কৃষক নেতারা দারি করেছেন যে, ২৬ জানুয়ারির সকালের মধ্যে এক লক্ষ ট্র্যাক্টর চলে আসবে।
আরও পড়ুন: সেরাম অগ্নিকাণ্ডে মৃত ৫, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে উঠে এলো ঘটনার ভয়াবহতা

এদিকে টিকরি সীমান্ত থেকে দিল্লির দিকে আসা রাস্তার একপাশ থেকে ব্যারিকেডিং সরিয়ে দেয় পুলিশ। রাস্তাটিও ফাঁকা করা হয়েছে। একইসঙ্গে, দিল্লি পুলিশ এবং সিআরপিএফ কর্মীরাও নির্ধারিত রুটে সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। প্যারেডে সর্বাধিক সংখ্যক ট্র্যাক্টর দিল্লি থেকে টিকরি সীমান্তে আসবে। পুলিশ শর্ত দিয়েছে যে, তিনজনের বেশি লোক কোনও ট্র্যাক্টরে বসতে পারবেন না। কৃষকদের সংগঠন ও পুলিশ সোমবার ট্যাক্টর মিছিলের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানা গেছে। পাঁচটি রুটে ৬০ কিলোমিটার রাস্তায় এই মিছিল চলবে।
আরও পড়ুন: ‘সুভাষকে বোঝা শক্ত’, দেশগৌরব সুভাষচন্দ্র ও তাঁর ভাবনা

২৬ জানুয়ারি টিকরি থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে ট্র্যাক্টর সমাবেশের সময় সুরক্ষা বাহিনী এবং কৃষক ছাড়া আর কেউ থাকবে না। একজন পুলিশ আধিকারিকের মতে, ২৫ জানুয়ারির সন্ধ্যায় সমস্ত দোকান বন্ধ থাকবে। টিকরি সীমান্তের আশপাশে কৃষকরা যে অঞ্চলটিতে জড়ো হয়েছেন, তা আবাসিক অঞ্চল। তাই এখানে ভারী সুরক্ষাব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে। ট্র্যাক্টর প্যারেডের জন্য ফারমার্স সোশ্যাল আর্মির এক হাজার স্বেচ্ছাসেবকও মোতায়েন করা হবে। এই তালিকাটিও পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করা হবে। এই স্বেচ্ছাসেবকদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অজিত সিংহ। তিনি বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবীরা ড্রেস কোডে থাকবেন। এর মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা, জল এবং চা সরবরাহ করা ছাড়াও ট্র্যাক্টর মেকানিকও থাকবেন। আমরা এরজন্য তাঁদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছি।’ উল্লেখ্য, কিষান সোশ্যাল আর্মির ১০০০ স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত থাকবেন এই ‘কৃষাণ প্রজাতন্ত্র’-এ।
আরও পড়ুন: কৃষকরা যা যা পেরিয়ে আসছেন

প্যারেডে অংশ নেওয়া ট্র্যাক্টরগুলিতে তিন ধরনের পতাকা ব্যবহার করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় পতাকা, কৃষকদের সংগঠন এবং খালসা পান্থ পতাকা। ইউনাইটেড কিষান মোর্চা ঘোষণা করেছে যে, কোনও সংস্থা তার ট্র্যাক্টরে তিরঙ্গা পতাকার অপমান করবে না। হরিয়ানা ও ইউপি থেকে আসা কৃষকরা তাঁদের ট্র্যাক্টরগুলিতে কিষান সংগঠনগুলির পতাকার সঙ্গে একটি তিরঙ্গা লাগিয়েছেন। একইসঙ্গে পঞ্জাবের ট্রাক্টরগুলিতে কৃষকদের সংগঠন এবং খালসার পতাকা রয়েছে।
টিকরি সীমান্ত থেকে ৬৩-৬৪ কিমি, সিংহু সীমান্ত থেকে ৬২-৬৩ কিমি এবং গাজিপুর সীমান্ত থেকে ৪৬ কিমি অবধি ট্র্যাক্টর মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কৃষকরা কেবল সিংহু, টিকরি এবং গাজিপুরের সীমানা থেকে দিল্লিতে প্রবেশ করতে পারবেন। পলওয়াল ও শাহজাহানপুর সীমান্তে অবস্থানরত কৃষকদের সেই পথে দিয়ে দিল্লিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এখানকার কৃষকরা বদরপুর সীমান্ত হয়ে আশ্রমে আসতে চান। তবে পুলিশ জানিয়েছে যে, তারা যদি কুচকাওয়াজে যোগ দিতে চায় তবে নির্ধারিত পথে আসতে হবে।

আন্দোলনের সময় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কৃষক টিকরি সীমান্তে রয়েছেন। এখানকার প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকায় দুই মাস ধরে কৃষকরা ট্রাক্টর-ট্রলির সঙ্গে অবস্থান করছেন। টিকরি সীমান্তে ট্রাক্টরের সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টিকরিতে ১০ থেকে ১২ হাজার ট্রাক্টর রয়েছে।