Mysepik Webdesk: লবঙ্গ আমাদের অতিপরিচিত একটি মসলার নাম। রান্নার স্বাদ আনতে এর জুড়ি মেলা ভার। লবঙ্গতে ২০-২৫ শতাংশ ক্লোভ তেল এবং ১০-১৫ শতাংশ টাইটার পেনিক এসিড থাকে, যার ফলে এটা খেতে ঝাঁজালো। এর আরেক নাম “লং”।রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশেই এখনো ঔষধি উপাদান হিসেবে এর ব্যবহার করা হয়। লবঙ্গের ভেতর রয়েছে ‘ইউজেনল’ নামের একটি উপাদান, যা এর সুগন্ধের মূল কারণ। উপাদানটি জীবাণু ও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। ভারতীয় উপমহাদেশে রান্নার মশলা হিসেবে এর ব্যবহার বেশি। তবে গবেষণায় বারবার প্রমাণিত, রোগ নিরাময়ে লবঙ্গের কার্যকারিতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সর্ষের তেলের কয়েকটি অবিশ্বাস্য উপকারিতা
১. দাঁত ব্যথা হলে কয়েকটি লবঙ্গ থেঁতো করে আক্রান্ত স্থানে দিয়ে রাখুন, দাঁত ব্যথার নিশ্চিত উপশম হবে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে লবঙ্গ তুলনাহীন। কয়েকটি মুখে ফেলে চিবালেই আপনার নিঃশ্বাস হয়ে উঠবে তরতাজা। দন্ত্য চিকিৎসকেরা প্রায়ই রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি লবঙ্গ চা বা আস্ত লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: শীতে স্নান করার আগে যেগুলি মনে রাখবেন
২. লবঙ্গের একটি উপাদান হল নাইজেরিসিন। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এটি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে বেশ কার্যকর। নাইজেরিসিনের জন্যই রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়া, ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোর কার্যক্ষমতা বাড়ানো ও ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর মতো কাজ ভালোভাবে হয়। তাই মধ্য মাত্রার ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ ভাল কাজে দেয়।
আরও পড়ুন: কোমর ব্যথার কারণ ও তার প্রতিকার
৩. লবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ফ্রি র্যাডিকলস কমাতে সাহায্য করে। লবঙ্গের একটি উপাদান হল ইউজেনল, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি- অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে। অক্সিডেটিভ ক্ষতির কারণে ক্যানসার হয়ে থাকে।
৪. লো বোন মাস বা হাড়ের কম ঘনত্ব এমন একটি অবস্থা, যা বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে, ইউজেনল হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে এটি মজবুত করে থাকে। এ ছাড়া লবঙ্গ ম্যাঙ্গানিজের উৎকৃষ্ট উৎস। ক্যালসিয়ামের মতো এটিও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী।
আরও পড়ুন: হাজার ব্যস্ততার মাঝে যোগব্যায়াম না করেও নিজেকে কীভাবে ফিট রাখবেন
৫. লবঙ্গের তেল আপনার নিয়মিত ব্যবহারের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুল পড়া কমবে এবং চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
সতর্কতা:
১. মুখের মধ্যে অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে বিষক্রিয়ার ভয় থাকে।
২. অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। এ জন্য নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতে হবে।
৩. অতিরিক্ত লবঙ্গ রক্ত পাতলা করে দেয়। হিমোফিলিয়া রোগীদের এ ক্ষেত্রে ভয় বেশি।
৪. ১৫ বছরের নিচের শিশুদের আলাদা করে লবঙ্গ বা এর চা থেকে দূরে রাখুন।
৫. লবঙ্গ বা লবঙ্গের তেলে অ্যালার্জি হচ্ছে কি না, নজর রাখতে হবে।