জানুন ভারতের প্রথম ফাঁসির মহিলা আসামি শবনমের জীবনকাহিনি, রয়েছে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য

Mysepik Webdesk: ধারালো কুড়োল দিয়ে নিজের পরিবারের সাতজনকে কুপিয়ে খুন করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর দোষী সাব্যস্ত হয়েছে শবনম আলি। বিরলের মধ্যে বিরলতম এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত শবনমকে ২০১০ সালে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আমরোহার নিম্ন আদালত। পরে ফাঁসি রুখতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছিল সে। যদিও গত বছরের জানুয়ারিতে শবনমের রিভিউ পিটিশন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু আমরোহা জেলে কোনও মহিলা কয়েদিকে ফাঁসি দেওয়ার ব্যবস্থা নেই, সেহেতু তাকে মথুরা জেলা সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরকের খোঁজ মুম্বইতে, কাছেই মুকেশ আম্বানির বাড়ি

তবে আর পাঁচটা সাধারণ বা দাগী অপরাধী যেমন হয়ে থাকে, শবনম নাকি একেবারেই তেমনটা ছিল। একথা জানিয়েছেন তারই এক বন্ধু। শবনমের ওই বিশেষ বন্ধু আরও জানিয়েছে, শবনমের বাবা ছিলেন পেশায় শিক্ষক। ছোটবেলা থেকেই নাকি শবনম দারুন মেধাবী ছাত্রী ছিল। শৈশবের ওই বন্ধু জানিয়েছেন, স্কুল থেকে কলেজ, বরাবরই পড়াশুনায় অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে এগিয়ে থাকত শবনম। ছোট থেকেই মেধাবী হওয়ার কারণে মেয়েটি নাকি এলাকার মধ্যে আদর্শ ছিল। আর সেই কারণেই খুব সহজেই সে স্নাতক হওয়ার পর স্নাতকোত্তরের গণ্ডি পেরিয়ে শিক্ষিকার চাকরিও পেয়ে গিয়েছিল। এই পর্যন্ত তার জীবনে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও জীবনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসতে শুরু করে পেশায় কাঠের মিস্ত্রি সেলিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর।
আরও পড়ুন: ব্যতিক্রমী ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছল ভারত-পাকিস্তান

তার ভালোবাসার পথে যখন কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় তার পরিবার, তখনি নাকি সে তার ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। প্রেমে অন্ধ হয়ে সে তার পথের কাঁটা সরানোর জন্য নিজের ১০ মাসের ভাইপো-সহ গোটা পরিবারকে ধারালো কুডুলের কোপে শেষ করে দেয়। শবনমের বন্ধু জানায়, নৃশংস সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানোর আগে থেকেই সে অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তার পেটে ছিল সেলিমের ঔরসজাত সন্তান। ওই পুত্র সন্তানের জন্ম হয় জেলের অন্ধকার কুঠুরির মধ্যেই। তবে তার ভবিষ্যৎ অবশ্য নষ্ট হয়ে যায়নি। ৬ বছর বয়সে তাকে দত্তক নেন শবনমের এই বন্ধুই। ফাঁসির আসামি বন্ধুর সন্তানকে লালনপালনের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে সে শহরের একটি নাম করা স্কুলে পড়ে। মায়ের মতোই সেও দারুন মেধাবী। সম্প্রতি সে মায়ের মৃত্যুদণ্ডের সাজা মাফ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সেই আবেদন খারিজ করে দেয়নি। তাই ফাঁসি পিছিয়ে যাওয়ায় আরও হয়তো কিছুদিন পৃথিবীর আলো দেখবে শবনম।